||১|| প্রথম কালবৈশাখী (অবশিষ্ট)

দিদান ব্যস্ত হয়ে উঠে দাঁড়াতেই আমার ঘোরটা কেটে গেল। "একেবারে বোকা! বুড়ো কোথাকার ! কিছু পারো না তুমি। সরো তো সরো!"-দিদান রাগে গজগজ করতে থাকল। তারপর আমার দিকে ফিরে বললো- " মিতুল মা, আজ আমার সাথে একটু যাবি শপিং মলে? আজকালকার ছেলেদের জামাকাপড়...."
আমি মাথা নাড়লাম। "বলছি কি..."-দাদুন কিছু বলতে যেতেই দিদান মুখ ভেংচে বলল-"থাক! আপনাকে আর কিছু বলতে হবে না!ঘরের ছেলে এতদিন পর ঘরে ফিরছে সেই খবর আগে না দিয়ে ছোট নাতনির সামনে রঙ্গ করছিলেন উনি! সরো তো তুমি!"-দাদুনকে আলগা ধাক্কা দিয়ে দিদান এইবার হরি-কার খোঁজে গেল। 
"দেখলি দিদিভাই? ভালমানুষের এই দশাই হয়! যতসব!"-দাদুন রাগে গরগর করতে করতে নিজের ঘরের দিকে চলে গেল। আমিও আস্তে আস্তে নিজের ঘরের দিকে হাঁটতে থাকলাম। আমার শরীর বড্ড হালকা লাগছে এখন। মনে হচ্ছে আমি যেন উড়ছি! আচ্ছা, খুব খুশি হলে কি এইরকম অনুভূতি হয়?
তিন্নি দাদুনকে নকল করে হঠাৎ বলে উঠল ,"ঋভু ফিরছে!" না আমি ভুল শুনিনি তবে। সে সত্যিই ফিরছে? ঘরে এসে মিউজিক প্লেয়ারটা চালাতেই থেমে থাকা জোয়ান বায়েজ গেয়ে উঠলেন-"he laughed liked the chimes of silver bell...." গানটা গাওয়ার সময় জোয়ান কার কথা ভেবেছিলেন আমার জানা নেই। কিন্তু আমার যে শুধু মনে হচ্ছে, ঋভু দা হাসছে। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ঋভু দা হাসছে। আর বলছে "মিতুল ,আমি ফিরছি। তোমার জন্যে...." জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম কোথায় গেছে সেই মনখারাপের শহর? আমার শহরের আকাশকে এত সুন্দরভাবে সাজতে তো আমি আগে কখনো দেখিনি! ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের দল ভেসে বেড়াচ্ছে ইতিউতি। পাশের জানলার কার্নিশে ঘর বেঁধেছে যে চড়ুইপাখি, সেও ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বেড়াচ্ছে তার সঙ্গীর সাথে। আমার আনন্দটা কি সবাই বুঝতে পারছে? বাইরের এই নীল আকাশ, মিউজিক প্লেয়ারে বাজতে থাকা জোয়ান বায়েজ আর ওই ছোট চড়ুইটা সবাই যেন খুব খুশি আজ। আমার সেলফোনটায় রবিন পাখি টুই টুই করে জানান দিল চিঠি আসার। ফোনস্ক্রিনটা অন হতেই দেখলাম one message from My Dylan,  "Mitul, I am coming back"....

Comments

Post a Comment

Popular Posts